গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ১০ টি কার্যকারী টিপস
বিটরুট খেতে ভালোবাসেন? বিট একটি চমৎকার সবজি, পুষ্টিগুণে ভরপুর, গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাদ্য তালিকায় একটি দুর্দান্ত সংযোজন। আমাদের দেশে বর্তমানে দিন দিন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । বিটরুট অনেক উপায়ে খাওয়া যেতে পারে, গর্ভাবস্থায় বিটরুট সালাদ বা রস হিসেবে কাচা খাওয়া থেকে শুরু করে ভাত বা রুটির সাথে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।
বিটরুট হলো নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর মূল জাতীয় সবজি, সারা বিশ্বব্যাপী
ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিটরুটে রয়েছে অধিক পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিনে
সমৃদ্ধ, যা গর্ভাবস্থায় ক্রমবর্ধমান ভ্রুণের জন্য সহায়ক। গর্ভাবস্থায় বিটরুট এর
উপস্থিতি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি আপনার অনাক্রম্যতার উন্নতি ঘটায় এবং
গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ গুলি থেকে রক্ষা করে।
আরো পড়ুন ঃ
মোটা হওয়ার সহজ উপায়
পেজ সূচিঃ গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ১০ টি প্রয়োজনীয় উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে বিটরুটের রস
- বিটরুটের রসের পুষ্টিগুণ
- বিটরুট খাওয়ার অপকারীতা
- বিটরুট খাওয়ার নিয়ম
- বিটরুট পাউডারের উপকারিতা
- বিটরুট পাউডারের দাম কত
- বিটরুট এর দাম কত
- গর্ভবতী মহিলাদের বিটরুট খাওয়া কি ঝুঁকিপূর্ণ
- প্রতিদিন কি পরিমান বিটরুট খাওয়া উচিত
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার স্বাস্থ্যকর উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার একাধিক উপকারিতা রয়েছে। আপনি যদি ভাবছেন বিটরুট
গর্ভাবস্থার জন্য কি ভালো, তাহলে তার সংক্ষিপ্ত উত্তর হল হ্যাঁ। তাছাড়া বিট রুট
খনিজ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ হওয়ায় আপনার ক্রোমবর্ধমান গর্ভের ভ্রুণকে প্রচুর
স্বাস্থ্য উপকারিতা ও প্রদান করে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক,
গর্ভ অবস্থায় বিটরুট খাওয়া আপনার শরীরের জন্য কতখানি উপকারী হতে পারে-
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: সাধারণত গর্ভাবস্থায় শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থায় প্রচলিত অনেক ধরনের সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য।
অনেক সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরে ফোলা ফোলা ভাব এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে মুক্ত পেতে আপনি খেতে পারেন বিটরুট। কেননা বিটরুটে
রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার যা আপনার হজম ক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় বিটরুট নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার পেট
পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন ঃ
ওজন কমাতে সাহায্য করে: গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন কমানো এবং সঠিক ওজন ধরে রাখার
জন্য আপনার ডায়েটের খাদ্য তালিকায় বিট রুটের জুস, কাঁচা বিটরুট রান্ন
করা, বিটরুটে সালাদ অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন।
আয়রনের ঘাটতি দূর করে: অধিকাংশ গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিহীনতার কারণে শরীরের
ক্লান্তি ও দুর্বলতা সমস্যা দেখা দেয়। বিট রুট আইরন সমৃদ্ধ, সেক্ষেত্রে গর্ভবতী
মায়েদের নিয়মিত বিটরুট খাওয়ার ফলে শরীরের ক্লান্তি এবং দুর্বলতা ঝুঁকি কমাতে
বিশেষভাবে সাহায্য করে। আবার আমরা অনেকেই নিরামিষ ভোজী রয়েছি, আমাদের জন্য
আয়রনের একটি দুর্দান্ত উৎস হতে পারে এই বিটরুট।
প্রি-ইক্ল্যাম্পসিয়ার ঝুঁকি কমায়: গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ফলে
আপনার রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করে। বিটরুট খাওয়ার ফলে গর্ভবতী
মহিলাদের মধ্যে প্রি- ইক্ল্যাম্পসিয়ার ঝুকি অনেকটাই কমে যায়।
অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি রাস করে: বিটরুটে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে এটি
গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খেলে আপনি অ্যানিমিয়ার ঝুকি থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
শরীরের প্রদান রোধ করে: বিটরুটের মধ্যে রয়েছে বিটেন নামক একপ্রকার প্রদান বিরোধী
এজেন্ট। ফলে গর্ভাবস্থায় আপনি যদি বিটরুট খান তাহলে এই বিটেন নামক এজেন্ট আপনার
জয়েন্ট বা সন্ধিগুলিতে প্রদান, ব্যথা এবং ফুলে যাওয়া প্রতিরোধ করতে পারে।
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: বিটরুট নামক গ্লাইসেমিক যুক্ত খাদ্য হওয়ার
কারণে এটি গ্লুকোজে রূপান্তরিত হতে এবং রক্তের মধ্যে শোষিত হতে অনেক বেশি সময়
নেই। যার ফলে আপনার রক্তের শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণ থাকে
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খেলে।
স্বাস্থ্যকর যকৃত উন্নীতকরণে: বিটরুটে রয়েছে বিটা সায়ানিন যা আপনার যকৃত এবং
রক্তকে বিষমুক্ত করতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি আপনার দেহ থেকে ফ্যাটি এসিড এবং
বিষাক্ত পদার্থ গুলি কে অপসারণ করে আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা নিশ্চিত
করতে পারে।
ভিটামিন সি সরবরাহ: অধিকাংশ গর্ভবতী মায়েরা চাই নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান প্রসব
করাতে। বিটরুটে বিদ্যমান ভিটামিন সি আপনার আয়রন শোষণে সহায়তা করে এবং একটি
স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা ও প্রসবের পথ তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায়
নিয়মিত বিটরুট খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসে বিটরুটের রস
একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে বিটরুটের রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ বিটরুটে রয়েছে ভিটামিন সি ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যা গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর পুষ্টি যোগাই এবং সুস্থ কোষের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। এছাড়া বিটরুটের রস হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে উন্নতি করে যা ভ্রুনকে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় আপনি যদি প্রতিদিন বিটরুটের রস পান করেন সেক্ষেত্রে আপনার উচ্চ
রক্তচাপ কমাতে পারে এবং দীর্ঘ স্থায়ী রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যেতে পারে। আবার
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতায় ভুগে থাকেন, সেক্ষেত্রে বিট রুটের রস পান
করে উপকার পেতে পারেন।কারণ বিটরুট আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে কাজ
করে।
গর্ভাবস্থায় বিটরুটের রস থেকে সর্বাধিক উপকার পেতে আপনি গর্ভাবস্থায় প্রথম মাস
থেকে বিটরুটের রস পান করতে পারেন। এছাড়াও আপনি আপনার প্রতিদিনের খাবারের সাথেও
বিটরুটের রস যোগ করতে পারেন এবং ভালো ফলাফল পেতে খালি পেটে বিটরুটের রস পান করতে
পারেন।
বিটরুটের রসের পুষ্টিগুণ
বিটরুটের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং পুষ্টি উপাদান। ফলে গর্ভাবস্থায়
চিকিৎসকরা বিটরুট খাওয়ার পরামর্শ দেন। গর্ভাবস্থায় বিটরুটের জুস খেলে প্রসবের
সময় কোনো রকম সমস্যা হয় না। শুধু গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নয়, সবার জন্য খাওয়া
ভালো। কারণ বিটরুটের জুস নিয়মিত খেলে চোখ ভালো থাকে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে,
রক্তশূন্যতা রোধ হয়, লিভার, কিডনিসহ একাধিক সমস্যায় উপকার মেলে।
তাহলে চলুন প্রতি ১০০ মিলিমিটার বিটরুটের রসে পুষ্টি উপাদান কত তা জেনে নি -
- শক্তি ৩৮ - কিলোক্যালরি
- কার্বোহাইড্রেট - ৮.৭৫ গ্রাম
- চিনি - ৮.৭৫ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম - ১৭ মিলিগ্রাম
- প্রোটিন - ০.৪২ মিলিগ্রাম
- আইরন - ০.৭৫ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস - ১৭ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম - ২৪২ মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম - ৫৪ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম - ১৭ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি - ২.৫ মিলিগ্রাম
বিটরুট খাওয়ার অপকারীতা
বিটরুটের রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। তবে কোন কিছুই অতিরিক্ত মাত্রায়
খাওয়া উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় বিটরুট এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত
হয়। তাহলে গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো কি চলুন সেগুলো
জেনে নেওয়া যাক
বিটের মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন নামক এক পোকা উপাদান। যার ফলে আপনার বমি বমি ভাব, গা
গুলানো, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য সমস্যাগুলি হতে পারে।
অতিরিক্ত বিটরুট খাওয়ার ফলে বিটুরিয়া নামক এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে যা
আপনার প্রস্রাব এবং মলের বর্ণ লাল বর্ণের রূপান্তরিত করে ফেলতে পারে।
বিটরুট বেশি পরিমাণে খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় কেননা বিটরুটে
থাকে অক্সালেট যা কিডনিতে পাথরের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
কিছু কিছু মানুষের এলার্জি সমস্যা রয়েছে যারা বিটরুট বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে
এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাতে করে আপনার শরীরে চুলকানি, ঠান্ডা, জ্বর
হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিটরুট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ কম তাদের
ক্ষেত্রে বিটরুট খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি খেলে উচ্চ রক্তচাপ আরও কমে যাওয়ার
সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বিটরুট খেলে মাথা ঘোরা বা ক্লান্তি ভাব বেড়ে যেতে পারে
সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিমাণ মতো বিটরুট খাওয়া উচিত।
ডাইবেটিকস থাকলে বিটরুট খাওয়া উচিত নয়, কারণ বিটরুটে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স
অত্যন্ত বেশি থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
বিটরুট খাওয়ার নিয়ম
প্রতিটি জিনিসই খাওয়ার নিয়ম রয়েছে এবং নিয়মমাফিক খাওয়া উচিত কোন কিছুই
নিয়মের বাইরে খাওয়া উচিত নয়। ঠিক সেরকমই একটি ফল হচ্ছে বিটরুট যেমন পুষ্টিকর
তেমনই স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই বিটরুট যেমন তেমনভাবে খাওয়া উচিত নয়
একে নিয়ম মেনে খাওয়া উচিত।আশা করি আপনি বিটরুট নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন ১০০%
নিশ্চিত। তাই চলুন এখন বিটরুট খাওয়ার নিয়ম অর্থাৎ সঠিক নিয়মটি জেনে নিই।
বিটরুট আপনি গুড়া করে পাউডার বানিয়ে খেতে পারেন নিয়মিত। বিটরুট আপনি
বিলিন্ডারে মেশিনে জুস বানিয়ে খেতে পারেন। তাছাড়া বিটরুট আপনি কাঁচা ও খেতে
পারেন।বিটরুটের পাতা ভাজি করে খেতে পারেন। বিটরুট যেহেতু একটি মূল বা বিট গাছের
কান্ড শাখা তাই আপনি এটি পাটাতে পিষে খেতে পারেন।
তাহলে আশা করি নিশ্চয়ই এতক্ষণে আপনি বুঝতে পেরে গেছেন বিটরুট আপনি বিভিন্ন
প্রক্রিয়ায় খেতে পারেন।
বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা
বিটু যেহেতু একটি গাছের মূল তাই এটি রোদে শুকিয়ে পাউডার বানানো যায়। বিটরুটে
যেহেতু প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে তাই এটি একজন মানুষের শরীরে
বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হিসেবে কাজ করে থাকে।
- এজমা এবং হৃদরোগের রোগীদের জন্য বিটরুট পাউডার খুবই উপকারী
- পেশি সংকোচন এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে বিটরুট পাউডার খুবই উপকারী
- লোহিত রক্তকণিকা এবং কোষ বৃদ্ধির জন্য বিটরুট পাউডার খুবই উপকারী
- হাড়ের গঠন ও হার শক্ত করতে বিটরুট পাউডার খুবই উপকারী
- বিটরুট শিশুদের আয়রনের ঘাটতি কমায়
- ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে বিটরুট পাউডার খুবই উপকারী
- বিটরুট পাউডারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।
বিটরুট পাউডারের দাম কত
আমরা অনেকেই কাঁচা বিটরুট কিনে থাকি। তবে বিটরুট পাউডার হিসেবেও বাজারে কিনতে
পাওয়া যায়। আমরা চাইলে অনেকে বাসায় ও বিটরুট এর পাউডার বানাতে পারি।
তবে অনেকের সময়ের কারণে বানাতে পারেন না। সাধারণত কাঁচা বিটরুট থেকে পাউডার
বিটরুট এর দাম তুলনামূলক ভাবে খানিকটা বেশি হয়। কেননা বিটরুট পাউডার তৈরির জন্য
অনেকগুলো বিটরুট একসাথে রোদে শুকে পাউডার তৈরি করতে হয়।
অনেকেই কাঁচা বিটরুট খেতে পারেন না, তারা সহজেই বিটরুট পাউডার খেতে পারবেন।
সাধারণত ২৫০ গ্রাম বিটরুট পাউডার আপনি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় পেয়ে যাবেন। তবে কেউ
কেউ আবার ১০০ গ্রাম বিটরুট পাউডারের দাম ৩০০ টাকা নিয়ে থাকে। বিটরুট পাউডারের
দাম যেমনই হোক না কেন বর্তমান বাজারে বিটরুট পাউডারের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই
চলেছে।
বিটরুটের দাম কত
আমরা অনেকেই বিটরুটের সম্পর্কে জানি কিন্তু তার দাম সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। কারণ
আমাদের দেশে এখনো সচরাচর সব জায়গায় বিটরুট পাওয়া যায় না। যার ফলে স্থান ভেদে
এর দামও বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে যারা বিটরুট চাষ করেছেন আপনি যদি তাদের থেকে
বিটরুট নিতে পারেন তাহলে অনেকটাই কম দামে পাবেন। যারা বিটরুট চাষ করে তাদের থেকে
বিটরুট ক্রয় করলে আপনি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দামে পেয়ে যাবেন।
আবার বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইনে প্ল্যাটফর্মও বিটরুট বিক্রি করে থাকে। সে ক্ষেত্রে
আপনি যদি দারাজ থেকে বিটরুট ক্রয় করেন তাহলে আপনার প্রতি কেজি দাম পড়বে ৩৮০
টাকা করে। এছাড়া আপনি ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরেও বিটরুট কিনতে পারবেন। আশা
করছি আপনি এখন বিটরুটের দাম সম্পর্কে সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা পেয়ে গেছেন।
গর্ভবতী মহিলাদের বিটরুট খাওয়া কি ঝুঁকিপূর্ণ
অনেকে মনে প্রশ্ন জাগে গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়া নিরাপদ কিনা। গর্ভবতী মহিলাদের
বিটরুট খাওয়ার ফলে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
কারণ বিটরুট পুষ্টির একটি ভালো উৎস। বিটরুট পরিমাণমতো খাওয়া গর্ভবতী মহিলাদের
এবং গর্ভের বাচ্চার জন্য খুবই ভালো।
বিটরুট দেখতে গোলাপী রংঙের সেহেতু এটি খাওয়ার পরে প্রসাবের এর রং গোলাপি হতে
পারে, এতে ভয়ের কিছু নেই। সেজন্য পরিমাণ মতো বিটরুট খেতে পারেন গর্ভবতী মহিলারা।
কারণ বিটরুট প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুন যা তাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে
সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ
তবে বিটরুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ শর্করা যাদের রক্তের শর্করা বেশি রয়েছে তারা
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিটরুট খাবেন। কারণ এটিতে শর্করা বেশি থাকাই
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
প্রতিদিন কি পরিমাণ বিটরুট খাওয়া উচিত
আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিটি জিনিস খাওয়ার আগে জানতে হবে সেটি কি পরিমাণ খাওয়া
উচিত আর কি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। কেননা বেশি পরিমাণে কোন জিনিস খাওয়া
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী না মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে শুয়ে অনেক ক্ষতি হতে পারে।
তাই শুধু গর্ভাবস্থায় নয় সাধারণ মানুষদের ও বিট রোড ঠিক পরিমাণ উচিত।বিটরুট কি
পরিমান খাওয়া উচিত এটি আপনার স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করবে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক
এবং কম বয়সিদের বিটরুট খাওয়ার পরিমাণ এর তারতম্য রয়েছে। সবাই যে একই রকম খেতে
পারবেন তা কিন্তু না।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন ৭৫থেকে ১০০ গ্রাম বিটরুট খেতে পারবেন। এই
পরিমাণ খেলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে এবং শরীরে বিভিন্ন সমস্যা এবং
ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। আবার কম বয়সে শিশুদের ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০
গ্রাম পরিমাণ খাওয়া উচিত। তাহলে আমার শরীরে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতা
পাওয়া সম্ভব। তাই প্রত্যেকেরই বিটরুট এর পরিমাণ জেনে খাওয়া উচিত তা না হলে
ক্ষতি হতে পারে।
লেখক এর মন্তব্য
বিটরুটের উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা কোনভাবে অস্বীকার
করার উপায় নেই। কেননা বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি আমাদের
শরীরের জন্য অনেক উপকারী এবং সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপনের সহায়তা করে থাকে।
বিটরুট শরীরকে বিভিন্নভাবে রোগ প্রতিরোধ, শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে।
বিটরুট দিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাবার তৈরি করতে
পারি। বিটরুট এর পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতার কারণে এটি সুপার ফুড হিসেবে
পরিচিত। তাই প্রত্যেকেরই বিটরুট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত। আশা
করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা বিটরুট এর উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় বিটরুট
খাওয়ার উপকারিতা, বিটরুটের অপকারিতা, বিদ্যুৎ খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আশা করা যায় আপনার যদি আমাদের লেখা আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত
মনোযোগ সহকারে পড়েছেন ও বুঝেছেন। তাই যারা বিটরুট সম্পর্কে এখনো জানেন না তারা
আজকের মাধ্যমে জেনে নেবেন এবং প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিদ্যুট রাখার চেষ্টা
করবেন।
আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারেছেন। আরো এইরকম নিত্য
নতুন আর্টিকেল পেতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই
থাকুন। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন।
মেনি অল ইনফর্মেশন বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url